একবিংশ শতাব্দীতে মধ্যযুগীয় বর্বরতা

- Update : 02:52:53 pm, Sunday, 7 September 2025 56 Views

একবিংশ শতাব্দীতে মধ্যযুগীয় বর্বরতা
ভোলার বোরহানউদ্দিনে নারীকে চুল কেটে ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা
ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটেছে এক নৃশংস ও অমানবিক ঘটনা। পরকীয়ার অভিযোগে গ্রামবাসীর একটি অংশ প্রকাশ্যে এক নারীকে হেনস্তা করে। এ সময় তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয় এবং গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপদস্ত করা হয়। উপস্থিত অনেকেই এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করলেও সাহস করে কেউ এগিয়ে আসেনি।
স্থানীয়রা জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহের মধ্যে ছিলেন। এরই সুযোগ নিয়ে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ‘সমাজ শুদ্ধ করার’ নামে বিচার বসান। কিন্তু সেই বিচার আইনের ধারা মেনে না হয়ে একেবারেই মধ্যযুগীয় কায়দায় সম্পন্ন হয়। তারা একজন নারীকে অমানবিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেন, যা সভ্য সমাজে অকল্পনীয়।
এ ঘটনার পর সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন— বাংলাদেশের সংবিধান বা কোনো আইনেই কাউকে প্রকাশ্যে চুল কেটে কিংবা জুতার মালা পরিয়ে অপদস্ত করার বিধান নেই। তবুও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে প্রশাসনের চোখের সামনে। অনেকেই মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এ ধরনের বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কিংবা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তারা প্রায়শই ব্যর্থ হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলছে, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। এমন অমানবিক ঘটনা প্রমাণ করে, সমাজে এখনও কিছু মানুষ নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়ে ন্যায়বিচারের নামে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনায় নারীর মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমাজেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কোনো নারীকে প্রকাশ্যে অপদস্ত করা শুধু ব্যক্তিকে নয়, পুরো সমাজের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে।
স্থানীয় সচেতন জনতা ও সুশীল সমাজ প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন— দ্রুত এই ঘটনার দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতা ও অপমানমূলক শাস্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
রায়হান পারভেজ
দ্য ডেইলি স্বাধীন
ভোলা