Dhaka 11:25 pm, Sunday, 13 July 2025
News::
  • রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত ৯টা ৫৮ মিনিটের দিকে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় এই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে।

ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত দেশ, জনদুর্ভোগ চরমে

Correspondent:
  • Update : 10:57:46 pm, Wednesday, 9 July 2025 4 Views

দেশজুড়ে কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বিশেষ করে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি হু হু করে বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন; অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্কুল, মাদ্রাসা কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে।

ফেনী, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে পানিতে। ফেনী জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। মুহুরী, ফেনী ও হালদা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক স্থানে রাস্তা ও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন হাজারো মানুষ।

কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বাড়ছে। ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের জমি প্লাবিত হয়েছে। অনেক এলাকায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

মাত্র এক মাস আগেই ভয়াবহ বন্যা পার করেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। সেই ক্ষত না শুকাতেই ফের পানি বাড়ছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে। নিম্নাঞ্চল আবার প্লাবিত হয়েছে, মানুষ দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সীমিত। বিশুদ্ধ পানির অভাব, খাবারের সংকট, শিশুখাদ্য ও ওষুধের ঘাটতিতে জনদুর্ভোগ চরমে। অনেক এলাকায় এখনও প্রশাসনের সহায়তা পৌঁছেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২–৩ দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা বিপদসীমার ওপরে থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ সতর্কতা:

সরকারি সতর্কতা অনুসরণ করুন, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন, নদীর তীর ও ভাঙনপ্রবণ এলাকায় চলাচল সীমিত রাখুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

শেষ কথা:

বাংলাদেশের মানুষ বন্যার সঙ্গে লড়তে অভ্যস্ত হলেও এবারের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সময় এসেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। কারণ, এই দুর্যোগ শুধু প্রাকৃতিক নয়—এটি একটি মানবিক সংকট।

Share This News

Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save your email and other information.

Uploader information
Tags :
UPDATE :

ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত দেশ, জনদুর্ভোগ চরমে

Update : 10:57:46 pm, Wednesday, 9 July 2025

দেশজুড়ে কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বিশেষ করে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি হু হু করে বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন; অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন স্কুল, মাদ্রাসা কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে।

ফেনী, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে পানিতে। ফেনী জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। মুহুরী, ফেনী ও হালদা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক স্থানে রাস্তা ও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন হাজারো মানুষ।

কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বাড়ছে। ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের জমি প্লাবিত হয়েছে। অনেক এলাকায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়েছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

মাত্র এক মাস আগেই ভয়াবহ বন্যা পার করেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ। সেই ক্ষত না শুকাতেই ফের পানি বাড়ছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে। নিম্নাঞ্চল আবার প্লাবিত হয়েছে, মানুষ দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সীমিত। বিশুদ্ধ পানির অভাব, খাবারের সংকট, শিশুখাদ্য ও ওষুধের ঘাটতিতে জনদুর্ভোগ চরমে। অনেক এলাকায় এখনও প্রশাসনের সহায়তা পৌঁছেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২–৩ দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা বিপদসীমার ওপরে থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ সতর্কতা:

সরকারি সতর্কতা অনুসরণ করুন, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন, নদীর তীর ও ভাঙনপ্রবণ এলাকায় চলাচল সীমিত রাখুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

শেষ কথা:

বাংলাদেশের মানুষ বন্যার সঙ্গে লড়তে অভ্যস্ত হলেও এবারের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সময় এসেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। কারণ, এই দুর্যোগ শুধু প্রাকৃতিক নয়—এটি একটি মানবিক সংকট।