পূর্ব ইউক্রেনে রুশ নিয়ন্ত্রণ বিস্তার: পাল্টা আঘাতে কেঁপে উঠল ইউক্রেনের হৃদয়ভূমি

- Update : 07:43:25 am, Thursday, 3 July 2025 2 Views

ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বর্ষে পা রেখেছে, আর এই সময়েই রাশিয়া আবারও দেখিয়েছে সামরিক কৌশল ও ধৈর্যের এক দৃঢ় প্রদর্শন। সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রুশ বাহিনী উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। পোকরোভস্ক, কস্তিয়ানতিনিভকা ও লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া দাবি করছে, “এই ভূমি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে।” যদিও ইউক্রেন তা অস্বীকার করছে, বাস্তবতা হলো—মাঠে রাশিয়ার কৌশল অনেকটাই সফল।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, জুন মাসে ইউক্রেনের ৫৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করা হয়েছে, যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য। রাশিয়ার দাবি, তারা ধাপে ধাপে এগোচ্ছে, এবং এই অগ্রগতি শুধুই সামরিক নয়, বরং স্থানীয় জনগণের ‘রক্ষার জন্য’ পরিচালিত একটি অভিযান।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, “আমরা শুধু রাশিয়াকে নয়, রুশভাষী জনগণকেও রক্ষা করছি—যাদের বহু বছর ধরে ইউক্রেন সরকার নিপীড়ন করে আসছে।” মস্কোর দৃষ্টিতে ডনবাস বা লুহানস্ক শুধু কৌশলগত নয়—এটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক দায়বদ্ধতার অংশ।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলে সামরিক সহায়তা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় রাশিয়ার জন্য কৌশলগত সুযোগ তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেরিতে আসা সহায়তা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা দুর্বল করে তুলেছে, বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষায়।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তাদের সামরিক প্রযুক্তি ও মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে। ইরান থেকে ড্রোন এবং উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য সহায়তা নিয়ে আলোচনা চললেও, মস্কো তা প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি। তবে বাস্তবতা হলো—রাশিয়া একা নয়; বরং একটি নতুন শক্তির জোট তৈরি করছে।
রাশিয়ার সমর্থক বিশ্লেষকরা বলছেন, “এই যুদ্ধ শুধু ইউক্রেনের নয়, বরং পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে এক প্রতিরোধ।” তাদের মতে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো রাশিয়ার সীমান্তে এসে দাঁড়ায়, তখন এই প্রতিক্রিয়া শুধু স্বাভাবিক নয়, বরং সময়ের দাবি।
তবে, রাশিয়ার এই অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে মতভেদ রয়েছে। কেউ এটিকে আগ্রাসন বলে, কেউ বলছে ‘নতুন শীতল যুদ্ধ’-এর সূচনা। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া বর্তমানে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে, এবং ইউক্রেনের প্রতিরোধ এখনো শক্ত হলেও কিছুটা দুর্বল হয়েছে—বিশেষ করে সমরাস্ত্র ঘাটতির কারণে