ধেয়ে আসছে টাইফুন উইফা: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দুর্যোগের আশঙ্কা

- Update : 10:15:42 am, Sunday, 20 July 2025 61 Views

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবারও প্রকৃতির ভয়াবহ রূপ—প্রবল ঘূর্ণিঝড় টাইফুন উইফা দ্রুতগতিতে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। শুরুতে ফিলিপাইন ও তাইওয়ানে আঘাত হেনে এখন এটি এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ চীনের উপকূল, হংকং ও ম্যাকাওয়ের দিকে।
আজ (রবিবার) সকালে হংকংয়ের আবহাওয়া বিভাগ সর্বোচ্চ T10 সতর্ক সংকেত জারি করেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে গাছপালা উপড়ে পড়েছে, বাস ও রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
৫০০-র বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, ক্যাথে প্যাসিফিক এবং অন্যান্য এয়ারলাইন্স যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
শহরের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
টাইফুন উইফার প্রভাবে ম্যাকাওতেও T9 সংকেত জারি হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কায় ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধ রাখা হয়েছে।
চীনের গুয়াংডং ও হাইনান প্রদেশে ঝড় মোকাবিলায় জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চল থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি এর আগে তাইওয়ান ও ফিলিপাইনে আঘাত হানে। তাইওয়ানে ঘণ্টায় ১২৬ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে গেছে এবং ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ফিলিপাইনে একটি দুর্ঘটনায় বিজ্ঞাপন বোর্ড ভেঙে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন।
আগামী কয়েকদিনে টাইফুন উইফা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের দিকে যেতে পারে।
থাইল্যান্ডে ৪০টিরও বেশি প্রদেশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কায় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
ভিয়েতনামে এর মধ্যেই হালং বে এলাকায় একটি পর্যটকবাহী নৌকা ডুবে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইফা আরও শক্তি সঞ্চয় করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ চীনের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে। এরপর এটি দুর্বল হয়ে লাওস ও ভিয়েতনামের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে।
তবে এই দুর্বলতাও ব্যাপক বৃষ্টি ও ভূমিধসের ঝুঁকি কমাবে না।
উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থানকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের দূতাবাসের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফ্লাইটে ভ্রমণরত যাত্রীদের আগে থেকেই সময়সূচি যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো।
প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিকভাবেই আসে। কিন্তু এ ধরনের দুর্যোগ যেন মানুষ ও রাষ্ট্রের প্রস্তুতির ঘাটতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। উইফার মতো ঘূর্ণিঝড়ের আগাম বার্তা পাওয়ার পরও বহু জায়গায় দুর্বল অবকাঠামো ও সচেতনতার অভাবেই ক্ষয়ক্ষতি বাড়ে।