রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকায় ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটেছে। ঋণের চাপ ও অভাব-অনটনে জর্জরিত হয়ে মিনারুল ইসলাম (৩৫) নামে এক দিনমজুর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েকে হত্যা করে নিজেও প্রাণ দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে দুটি আলাদা ঘর থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দুই পৃষ্ঠার হাতে লেখা চিরকুটে মিনারুল উল্লেখ করেছেন— ঋণের দায় ও আর্থিক কষ্টই এই মর্মান্তিক ঘটনার মূল কারণ। তিনি লিখেছেন, পরিবারের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় এবং অনুরোধ করেছেন, তাঁর বড় ভাইয়ের পরিবার যেন মরদেহ না দেখে কিংবা জানাজায় অংশ না নেয়।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের সবাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে মিনারুল প্রথমে স্ত্রী মনিরা বেগম (৩০), এরপর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছেলে মাহিম (১৪) ও দেড় বছরের মেয়ে মিথিলাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে অন্য ঘরে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। সকালে দরজা না খোলায় তাঁর মা খোঁজ নিতে গিয়ে মরদেহ দেখতে পান এবং চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।
স্বজনদের ভাষ্য, মিনারুল সংসারে শান্তিপূর্ণ ছিলেন, কোনো দাম্পত্য বিরোধ ছিল না। তবে তিনি এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি শোধে চাপের মধ্যে ছিলেন। শাশুড়ি জানান, তাঁর জামাই দুটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এবং কিস্তির টাকা জোগাড়ে কষ্ট করতেন। মিনারুলের বাবা জানান, আগের ঋণ জমি বিক্রি করে শোধ করা হলেও নতুন করে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না।
এ ঘটনায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চারজনের মৃত্যু দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ জড়ো হন। খবর পেয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা হিসেবে ধারণা করা হলেও ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হবে। ঘটনাটি তদন্তে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
সম্পাদক: মাহমুদুল হাছান চৌধুরী
Design & Development By HosterCube Ltd.