গাজা উপত্যকায় ফের শুরু হয়েছে অগ্নিবর্ষণ ও রক্তপাতের ভয়াল দৃশ্য। ইসরায়েলের লাগাতার বিমান হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১১ জন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। উত্তরের একটি উপকূলীয় ক্যাফেতে চালানো হামলায় একাই নিহত হন অন্তত ৩৯ জন; ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে পড়ে রক্ত ও ধ্বংসাবশেষ।
এই ভয়াবহতার মধ্যেই আলোচনার মেঘে দেখা দিয়েছে একটুখানি আশার আলো। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ৬০ দিনের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, তবে শর্তসাপেক্ষে। ইসরায়েল স্পষ্ট বলেছে, যুদ্ধের শেষে হামাসের কোনো অবস্থান গাজায় থাকতে পারবে না। হামাস এই প্রস্তাবকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে, যদিও এখনও চূড়ান্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, “হামাস যতক্ষণ গাজায় থাকবে, ততক্ষণ যুদ্ধও চলবে।” এই অবস্থানে যেমন শান্তির সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি রয়েছে নতুন করে সংঘর্ষের ভয়। কারণ, হামাসও নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে আপস করতে রাজি নয়।
এদিকে গাজার মানবিক অবস্থা চরম বিপর্যয়ের দিকে। ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল—চিকিৎসা, পানি ও খাদ্যের তীব্র সংকটে দিন কাটাচ্ছে লাখো মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের নিথর দেহ, পিতার আর্তনাদে কাঁপছে আকাশ।
আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও মাঠে এখনো চলছে গোলাবর্ষণ। জাতিসংঘ বলছে, “গাজা এখন এক মানবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রস্থল।”
এই যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ, কূটনৈতিক কৌশল আর অমানবিক নিষ্ঠুরতা—আর মাঝখানে পড়ে আছে এক জর্জরিত জাতি, যারা শুধু বাঁচতে চায়। শান্তির সম্ভাবনা দিগন্তে দেখা দিলেও, বাস্তবতা এখনো রক্তমাখা এক যাত্রাপথ।
সম্পাদক: মাহমুদুল হাছান চৌধুরী
Design & Development By HosterCube Ltd.